Alexa
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

রাজনীতিতে শিয়াল

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২২

রাজনীতিতে শিয়াল রাজশাহীর একটি ঘটনায় শিয়াল ও কুমিরছানাদের গল্পটা মনে পড়ল। লোককাহিনিকে মানুষের মনগড়া গালগপ্পো মনে করার কোনো কারণ নেই। জীবন থেকে আহরিত ঘটনাইএকসময় গল্পের আকারে প্রকাশ করে মানুষ। ফলে তার রেশ থেকে যায় সমাজ-বাস্তবতায়।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এক নারী কাউন্সিলর এবার অবতীর্ণ হয়েছিলেন শিয়ালের ভূমিকায়। তিনি একটি জমি দেখিয়ে চারজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা। সেই গল্প বলার আগে শিয়াল ও কুমিরছানাদের গল্পটা বলে ফেলা ভালো। শিয়াল পণ্ডিত ভালো শিক্ষক। তাই কুমিরের ইচ্ছে হলো, তার সাত সন্তানকে শিয়াল পণ্ডিতের পাঠশালায় ভর্তি করাবে। শিয়ালের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর শিয়াল রেখে দিল কুমিরছানাদের। তারপর প্রতিদিন একটি করে ছানা খেতে লাগল। মা কুমির এসে যখন তার ছানাদের দেখতে চায়, তখন একই ছানাকে সাতবার দেখিয়ে দেয়। তারপর যখন শেষ ছানাটিকেও খেয়ে ফেলল সে, তখন পালাল। এই ছিল গল্পের একটা অংশ।

এটুকুই আমাদের লাগবে। এ জায়গায় শিয়াল পালাতে পেরেছিল, কিন্তু আমাদের রাজশাহীর নারী কাউন্সিলর তাঁর বাকি পারফরম্যান্স ঠিক রাখার পরও পালাতে পারেননি। তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ আলীগঞ্জ মৌজার একটি জমি নিয়েই যত কাণ্ড। ফারজানা হক নামের এই নারী কাউন্সিলর এ জমিটিই অল্পদিনের ব্যবধানে চারজনের কাছে বায়না রেজিস্ট্রি করেন। বায়না বাবদ তিনি ৯৭ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এখন এই জমিটা ক্রয়সূত্রে কার—এ হলো কোটি টাকার প্রশ্ন। জুন থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই এই চালাকিটা করেন তিনি। ক্রেতারা প্রতারণা ধরতে পারেন। একই কুমিরছানা তাঁদের দেখানো হয়েছে বারবার। প্রতারণার শিকার একজন থানায় মামলা করলে ফারজানা হকের থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ে।স্বামী রেজাউল ও সহযোগী তোফায়েলসহ ফারজানা এখন কারাগারে রয়েছেন।

রাজনীতির অর্থ জনগণের সেবা। কিন্তু নির্বাচিত হলেই নিজেকে জনগণের অধীশ্বর ভাবার প্রবণতা থেকে নিজেদের বের করতে পারছেন না কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি। ফলে দুর্নীতির সূচকে বহুকাল ধরে সারা বিশ্বে ঈর্ষণীয় নাম হয়ে থাকছে বাংলাদেশ। ঘুষ নিয়ে এখন আর প্রশ্ন তোলা যায় না। ঘুষ যেন হয়ে উঠেছে সরকারি কাজের ক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবনের অংশ। এখন অনেকেই এ ব্যাপারে বিস্মিত হয় না। এটা যেন প্রচলিত রীতি!

অথচ সরকারিভাবে কৃচ্ছ্রসাধন, দুর্নীতির শিকড় ধরে টান দেওয়ার কথা বারবার বলা হয়েছে। সেই ডাকে সাড়া দেওয়া হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। আমলাতন্ত্র এবং জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ করেছেন অনেক, কিন্তু তাতে জনগণের কোনো লাভ হয়নি। তাঁদের এই লড়াইটা যে কারণেই হয়ে থাকুক না কেন, মূলত দেশের অর্থ ও মানুষের ওপর প্রভূত ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, সেটাই মুখ্য।

জনগণের সেবায় নিয়োজিত না হলে শিয়ালগুলোর ধূর্ততাকেই মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। ফারজানা তো উপলক্ষমাত্র!

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     

    নতুন শিক্ষাক্রমে ব্যাপক প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল

    হিরো আলম যেভাবে সুপারহিরো হয়ে উঠছে

    ওষুধের দাম বৃদ্ধি ঠেকান

    নিরপেক্ষ বিচারক

    ধন্যবাদ এবং প্রত্যাখ্যান

    রুচির দুর্ভিক্ষ: বড় বিতর্ক!

    রাষ্ট্রদ্রোহ আইন অসাংবিধানিক, পাকিস্তানের উচ্চ আদালতের রায়

    খুলনায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

    দেশের মানুষ শান্তিতে খাদ্য গ্রহণ করে যাচ্ছে: সুজিত রায়

    শ্রীপুরে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চালকের মৃত্যু

    বান্দরবানে ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বিজিবি

    পাকিস্তানে জাকাত বিতরণের সময় পদদলিত হয়ে ১১ নারী-শিশুর মৃত্যু