ফরাসি সরকার অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিবাদে বিক্ষোভের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০ লাখ মানুষ রাজপথে নেমে এসেছেন। এতে যোগ দিয়েছে দেশটির বাম সংগঠনগুলোর আটটি ইউনিয়ন।
বিপুলসংখ্যক মানুষের বিক্ষোভের সময় প্যারিসহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যালয়, গণপরিবহন ও তেল শোধনাগারের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আজ মঙ্গলবারের বিক্ষোভে গত ১৯ জানুয়ারির বিক্ষোভের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ অংশ নেয়।
এরপরও ইমানুয়েল মাখোঁ সরকার চাকরি থেকে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিলটি পাস করতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহে বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হবে। যদিও দুই তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্য এই বিলের বিরুদ্ধে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আজ প্যারিসের দ্যু-ইতাল প্রাসাদের সামনে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আগেই ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের শহর তুলুস, মার্সেল, নিস এবং উত্তরাঞ্চলের শহর সেন্ট নাজার, নান্ত ও রেনেতে হাজারো মানুষ সড়কে নেমে পড়েন। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার–বিরোধী বৃহত্তম বিক্ষোভ দেখছে ফ্রান্স।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণের রাখতে ১১ হাজার পুলিশ সদস্যকে ফ্রান্সের ২০০টি ছোট বড় শহরে মোতায়েন করা হয়েছে।
মার্সেলে আন্দোলনে অংশ নিয়ে কট্টর বামপন্থী নেতা জ্যঁ লুক মেলেসোঁ বিবিসিকে বলেন, ‘মাখোঁর পরাজয় সুনিশ্চিত। কেউ চায় না তাঁর এই বিল পাস হোক। দিন যাচ্ছে, এই বিলের বিপক্ষে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।’
প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কারিমা (৬২) নামের এক নারী বলেন, ‘এই আইন নারীদের জন্য আরও বেশি অমানবিক। আমাদের অনেকেরই চাকরির বয়স শেষ। এরপরও পেনশন পেতে হলে এখন পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করতে হবে।’
মুলহোসেঁ শহরে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সিলভি বলেন, ‘আমার বয়স ৫৭ বছর। এই প্রথম আমি সরকারের কোনো বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছি।’
এদিকে ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ফিলিপ আঘোঁ বিবিসিকে বলেন, ‘এই বিল পাস হওয়া ফ্রান্সের জন্য প্রয়োজন। কেননা দেশটি ১৪ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘাটতিতে রয়েছে। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বয়স বাড়ালে কর্মসংস্থানের হার বাড়বে, এতে সরকারকে বিনিয়োগের আত্মবিশ্বাস জোগাবে। কেননা ফ্রান্সের অনেক বিদ্যালয় ও হাসপাতাল উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তি ও সবুজ শিল্পায়নে বিনিয়োগ দরকার।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে