Alexa
বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

সেকশন

epaper
 

ক্যাম্পাসের বইপাগলেরা

তাঁরা উভয়ই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. শাহজালাল শাহীন, অন্যজন মনোবিজ্ঞান বিভাগের আবির নোমান। শাহীন তৈরি করেছেন ‘স্বপ্ন সিঁড়ি উন্মুক্ত লাইব্রেরি’ আর নোমান তৈরি করেছেন ‘অবসর ভাসমান পাঠাগার।’ বইপাগল এ দুই তরুণের গল্প শুনেছেন সিফাত রাব্বানী।

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫৬

মো. শাহজালাল শাহীন ও আবির নোমান স্বপ্ন সিঁড়ি উন্মুক্ত লাইব্রেরি
‘জ্ঞানের জানালা হোক উন্মুক্ত’ স্লোগান নিয়ে বই পড়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে স্বপ্ন সিঁড়ি উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

স্বপ্ন সিঁড়ির পথ চলার শুরু হয় ২০১৮ সালের শেষ দিকে। তখনো নাম ছিল না, লক্ষ্য উদ্দেশ্য বা স্লোগানও ছিল না। নিজের কেনা ঘরে থাকা ১০০ বই নিয়ে এ পাঠাগার গড়ে তোলেন মো. শাহজালাল শাহীন। নিজের বইগুলো তিনি পড়তে দিতে শুরু করেন বন্ধুদের। তারপর বিভিন্ন বিভাগে ছড়িয়ে থাকা পরিচিত ‘ভাই-বেরাদার’ তাঁর কাছ থেকে বই নিয়ে যেতেন চেয়ে। শুরুটা এভাবেই। তখন এর কোনো নাম ছিল না।

কিছুদিন পর নাম ঠিক করা হলো। আগের ফেসবুক গ্রুপকে আরও সংগঠিত করা হলো। এক বছরের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেকের বেশি বিভাগে স্বপ্ন সিঁড়ির পাঠক ছড়িয়ে গেল। তখন পাঠক এত বেড়ে যায় যে বাসা থেকে প্রতিদিন বই এনে বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছিল না।

২০১৯ সালের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্থায়ী বুকশেলফ রাখার জায়গার আবেদন করেন শাহীন। নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সে অনুমতিও পান তিনি। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালে স্বপ্ন সিঁড়িকে সাংগঠনিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টরের তত্ত্বাবধানে ১০ জন কার্যনির্বাহী সদস্য নিয়ে ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করেন শাহীন। করোনাকাল কাটিয়ে ক্যাম্পাস খোলার পরে এখন আবারও পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠছে স্বপ্ন সিঁড়ি উন্মুক্ত লাইব্রেরি।

স্বপ্নসিঁড়ি উন্মুক্ত লাইব্রেরি।tছবি: সংগৃহীত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে বই পড়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে কাজ করে স্বপ্ন সিঁড়ি। এর প্রতিটি সদস্য একটি বই নিয়ে এক সপ্তাহ নিজের কাছে রাখতে পারেন। বর্তমানে এখানে বইয়ের সংখ্যা ৫০০-র বেশি এবং পাঠকসংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৫০০। শিক্ষার্থীদের বইমুখী করতে ক্লাস প্রমোশন, বুক রিভিউসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে স্বপ্ন সিঁড়ি। 

অবসর ভাসমান পাঠাগার
যাঁদের বই পড়ার আগ্রহ আছে কিন্তু পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহে নেই, তাঁদের বই পড়তে দিয়ে সহায়তা করে অবসর ভাসমান পাঠাগার। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সংগঠনটির যাত্রা শুরু। এর প্রতিষ্ঠাতা আবির নোমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

আবির নোমান নিজে খুব বেশি বই পড়ার সুযোগ পাননি। এ সমস্যা যে অন্যদেরও আছে, সেটি তিনি অনুভব করেন। যখন সুযোগ এল, বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন বিষয়টি নিয়ে। এরপর মাত্র ২৬টি ব্যক্তিগত বই নিয়ে যাত্রা শুরু করে অবসর ভাসমান পাঠাগার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও অবসরকে বই দিয়ে ও আর্থিকভাবে সহায়তা করেন। এর পর থেকে এই অবসরকে আর থেমে থাকতে হয়নি।

অবসর ভাসমান পাঠাগার। ছবি: সংগৃহীত নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে ২০১৯ সালে নোমান অবসর ভাসমান পাঠাগারকে নিয়ে গেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখন পাঠাগারটির সদস্যসংখ্যা ১ হাজার ৫০০-র বেশি আর বইয়ের সংখ্যা ৫০০-র বেশি। শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে এখান থেকে বই সংগ্রহ করে পড়তে পারেন এক সপ্তাহ বা কখনো বেশি সময়ের জন্য। বই নেওয়ার আগে ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে কমেন্ট করে জানাতে হয় তালিকার কোন বইটি পাঠক পড়তে চান। বইটি হাতে থাকাসাপেক্ষে শিক্ষার্থীকে পৌঁছে দেন অবসরের আবির নোমান ও তাঁর বন্ধুরা।

অবসর ভাসমান পাঠাগারে বই পড়ার জন্য সদস্য হতে হয়। ১০০ টাকা ফি দিয়ে বিভিন্ন পাঠচক্র ও সভা-সেমিনারে অংশ নেওয়া যায়। এ ছাড়া স্থায়ী সদস্যরা বিভিন্নভাবে সংগঠনকে সহায়তা করতে পারেন চাইলে। সদস্যরা চাইলেও নিজেদের বই পাঠাগারে দিয়ে দিতে পারেন। কেউ যদি বই ফেরত চান, সময় দিয়ে জানালে বই ফেরতও পাওয়া যায়।

অবসর ভাসমান পাঠাগারের সদস্যরা অফলাইন ও অনলাইন দুই জায়গায় সমান সক্রিয়। ফেসবুকে অবসরের ‘বাংলিশ নয়, বাংলায় লিখব’ হ্যাশট্যাগ বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবসরের শাখা হবে বলে বিশ্বাস করেন পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া এই ভাসমান পাঠাগারের কার্যক্রম বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও দূরপাল্লার বাসেও চালু করার চিন্তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবির নোমান।

মন্তব্য

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।
Show
 
    সব মন্তব্য

    ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

    এলাকার খবর

     
     
    সুগন্ধ দিবস

    বিচিত্র গন্ধ, বিচিত্র অনুভূতি

    আজকের রাশিফল

    সুখ দিবস

    প্রিয়জনকে সুখী করতে পারে যে ৫টি কাজ

    রূপ বটিকা: ওজন কমাতে সুষম খাবার খান

    চিন্তাধারায় এগিয়ে চলাই আধুনিকতা

    হয়ে গেল এফডিসিবি বাংলাদেশ ফ্যাশন সপ্তাহ

    স্বর্ণের দাম এক লাফে সাড়ে ৭ হাজার টাকা বাড়ানোর পর কমল ১১০০

    ভাস্কর শামীম শিকদার আর নেই

    ১২ দফা নিয়ে আলোচনার আশ্বাস

    র‍্যাপার ব্যাড বানির বিরুদ্ধে ৪০ মিলিয়ন ডলারের মামলা করল তাঁর প্রাক্তন

    সিঙ্গারের ফ্রি এসি ক্লিনিং সার্ভিস আবারও চালু 

    বাঁশখালীতে হরিণ শিকারের পর জবাই, ৫ জনের কারাদণ্ড