ঢাকার ধামরাইয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়ে সাড়া না পেয়ে চাঁদা তুলে গাজীখালী নদীর ওপর ১৪০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করেছেন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলার গাঙ্গুটিয়া বাজারের পাশে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর সম্প্রতি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে ১১টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি কমেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া, গাবরাপাড়া, দত্তনালাই, বড় নালাই, অর্জুনালাইসহ পার্শ্ববর্তী জেলা মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার মহিষালোহা, গওলা, ব্রাহ্মণবাড়ি, কলাশুর, কৈজুরি ও চামুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, শিক্ষার্থীসহ ব্যবসায়ীরা নানা প্রয়োজনে প্রতিদিনই নদীটি পারাপার হতে হয়। এসব গ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে গাঙ্গুটিয়া বাজারের পাশে নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। এতে ক্ষুব্ধ দুই পারের লোকজন চাঁদা তুলে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন।
গাঙ্গুটিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘গাঙ্গুটিয়া বাজারের পাশে একটি সেতুর জন্য এক যুগের বেশি সময় ধরে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি। তাঁরা কথা দিয়েও সেতু নির্মাণ করে দেননি। এরপর দুই পারের মানুষের কাছ থেকে চাঁদা তুলে ৭ ফুট প্রশস্ত আর ১৪০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করি। লোহার পিলার আর মোটা টিনের পাত দিয়ে সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা।’
গাঙ্গুটিয়া বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মন্তোষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘শত বছর ধরে নদীর দুই পারের ১১টি গ্রামের মানুষ গাঙ্গুটিয়া বাজারে আসছেন। একটি সেতুর অভাবে একসময় বর্ষায় খেয়ানৌকা, আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ছিল তাঁদের পারাপারের ভরসা।’
কলাশুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, তাঁদের গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অধিকাংশ কৃষকই উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য গাঙ্গুটিয়া বাজারে নিয়ে যান। কিন্তু বাজারের কাছে গিয়ে নদী পার হতে তাঁদের দুর্ভোগের শিকার হতে হতো।
গাঙ্গুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক আসে নদীর অপর পার সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে। বর্ষায় খেয়া পারাপারের ভয়ে তাদের অনেকেই স্কুলে আসত না। সেতু নির্মাণের ফলে শিক্ষার্থীরা এখন সহজেই নদী পার হতে পারছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে