এশিয়ার অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের শেয়ারের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। গতকাল বুধবার ভারতীয় পুঁজিবাজারে দরপতনের কারণে তাঁর মোট সম্পদের দাম ৬০০ কোটি ডলার কমে যায়। একটি মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান তাঁর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে কারসাজি ও হিসাবে জালিয়াতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এমন দরপতন হয় বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়।
৬০ বছর বয়সী আদানি বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি, যাঁর আনুমানিক ১২ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কয়লাখনি থেকে ভারতের ব্যস্ততম বন্দর পর্যন্ত ভারতীয় এই ব্যবসায়ীর আগ্রহ রয়েছে।
ধনাঢ্য এই ব্যবসায়ী গতকাল ফোর্বসের ‘রিয়েল-টাইম বিলিয়নিয়ারদের’ তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন। রাতারাতি তাঁর মোট সম্পদের প্রায় পাঁচ শতাংশ বা প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি ডলার কমে যায়। গতকাল বিনিয়োগকারীরা আদানির গ্রুপ অব কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করতে থাকেন দেদার।
মার্কিন বিনিয়োগ গবেষণাকারী সংস্থা হ্যান্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানি গ্রুপ ‘কয়েক দশক ধরে নির্লজ্জভাবে একটি শেয়ার বাজারে কারসাজি করে আসছে এবং তারা হিসাব জালিয়াতিতে জড়িত।’
সংস্থাটি বলছে, তারা আদানি গ্রুপের প্রাক্তন নির্বাহীদের সাক্ষাৎকার, একাধিক দেশে আদানির মালিকানাধীন ব্যবসা পরিদর্শন এবং নথি পর্যালোচনার ভিত্তিতে দুই বছরের তদন্তের পর আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছে।
হ্যান্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আদানির বড় ভাই বিনোদ মরিশাস, সাইপ্রাস এবং বেশ কয়েকটি ক্যারিবিয়ান দ্বীপে ‘অফশোর শেল’ পরিচালনা করেন।
হ্যান্ডেনবার্গ বলছে, এটি তালিকাভুক্ত আদানি কোম্পানিগুলোর ‘আর্থিক অবস্থা এবং সচ্ছলতা বজায় রাখার জন্য’ অপ্রকাশিত লেনদেন এবং উপার্জনের কারসাজির অসংখ্য উদাহরণ চিহ্নিত করেছে।
পুঁজিবাজারে রেকর্ড ২৫০ কোটি ডলারের শেয়ার ছাড়ার আগমুহূর্তে আদানি গ্রুপের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটল। আগামী শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে ২৫০ কোটি ডলারের শেয়ার ছাড়বে বলে জানা গেছে।
এদিকে হ্যান্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের পর বিবৃতি দিয়েছে আদানি গ্রুপ। তাদের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জুগেশিন্দার বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রতিবেদনটি ভুল তথ্য, পুরোনো এবং ভিত্তিহীন ও ভুয়া অভিযোগের সংমিশ্রণে করা।’
আদানি গ্রুপের শেয়ার গত তিন বছরে ২০০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির মালিক আদানির মোট সম্পদে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি যোগ করেছে। একই সঙ্গে তাঁকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নিয়ে এসেছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে