বাংলা ব্যান্ডসংগীতে মাকসুদুল হক গুরুত্বপূর্ণ এক নাম। শুধু সুরের ভিন্নতা নয়, তাঁর গানে পাওয়া যায় সময়ের ছাপ। গানকে তিনি ব্যবহার করেছেন প্রতিবাদের অস্ত্র হিসেবে। মাকসুদের গান তাই হয়ে উঠেছে কখনো প্রেমের আখ্যান, কখনো প্রতিবাদের অস্ত্র।
মাকসুদের সংগীতজীবন শুরু হয় ইংরেজি গান দিয়ে। ১৯৭৩-৭৪ সালে বন্ধুরা মিলে তৈরি করেন ‘ফিয়াস্কো’ ব্যান্ড। তখন থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গাইতেন মাকসুদ। এরপর যোগ দেন ‘ফিডব্যাক’ ব্যান্ডে। তখনো ইংরেজি গানই গাইতেন। আশির দশকে আজম খানের অনুপ্রেরণায় শুরু করেন বাংলা গান গাওয়া।
‘মৌসুমী ১’ দিয়েই মাকসুদের বাংলা গানের শুরু। তত দিনে ‘চিঠি’ ও ‘মাঝি’ শিরোনামে দুটি গানও লিখে ফেলেছেন। এসব গান নিয়ে বাজারে আসে ফিডব্যাকের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘উল্লাস’। দ্রুততম সময়ে সাড়া ফেলে অ্যালবামটি। এরপর ‘মেলা’, ‘জোয়ার’, ‘বঙ্গাব্দ ১৪০০’—অ্যালবামগুলো মাকসুদের পরিচিতি আরও বাড়িয়েছে।
ফিডব্যাকের সঙ্গে দীর্ঘ যাপনে ইস্তফা দিয়ে একসময় নিজেই গড়ে তোলেন ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ড। এ ব্যান্ড নিয়েই এখনো নিজের সাংগীতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন মাকসুদ। গানে-স্লোগানে তিনি পেরিয়ে এলেন ৪৫টি বছর। নিজের সাংগীতিক জীবনের ৪৫ বছর পূর্তির উপলক্ষটি জাঁকজমক করেই পালন করতে চান মাকসুদ। আগামী ১৮ মার্চ রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ অডিটরিয়ামে আয়োজিত হবে ‘মাকসুদ ৪৫ ইয়ারস ইন মিউজিক’ নামের কনসার্ট। এতে মাকসুদ গাইবেন, স্মৃতিচারণা করবেন। তাঁর সঙ্গে ওই দিন গাইবে আরও পাঁচ ব্যান্ড—মাইলস, ফিডব্যাক, ওয়ারফেজ, দলছুট ও পেন্টাগন। এ কনসার্টের উদ্যোগ নিয়েছেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী।
৪৫ বছর পূর্তির কনসার্ট উপলক্ষে গতকাল আয়োজিত হয় সংবাদ সম্মেলন। সেখানে এসেছিলেন ফোয়াদ নাসের বাবু, হামিন আহমেদ, আলী সুমনসহ অনেকে।
আয়োজনটি নিয়ে মাকসুদুল হক বলেন, ‘অনেক বছরই তো গানবাজনা করলাম। ১৯৭৮ সাল থেকে যদি ধরি, যে বছর ফিডব্যাকে জয়েন করেছিলাম, সে হিসাবে এ বছরই আমার সংগীতজীবনের ৪৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। নিজে একটু প্রচারবিমুখ মানুষ আমি। তারপরও তো একটা শিল্পীর জীবনে ৪৫ বছর খুব একটা আসে না। আমার জীবনে এসেছে। তাই সবাইকে নিয়ে উপলক্ষটি উদ্যাপনের পরিকল্পনা করেছি।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে