চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতারণার মামলায় এক নারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সঙ্গে পাঠানো হয়েছে তাঁর তিন বছরের শিশুকেও। আজ রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমলি আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন।
পরে আজ সন্ধ্যায় মা-মেয়েকে কারাগারে নেওয়া হয়। ওই নারীর নাম শরিফা জাহান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরিফা জাহানের আইনজীবী মাহিদুল মূলক। তিনি বলেন, শিশুটির কোনো নিরাপদ স্থান না থাকায় মা নিজ ইচ্ছায় কারাগারে নিতে চাইলে আদালত তাতে সম্মতি দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় কথা হয় শরিফা জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর দুলাভাই তাঁকে একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালনা কমিটির সদস্য করেছিলেন। পরে গ্রাহকদের একাধিক মামলায় তাঁকেও আসামি করা হয়। তিন বছরের শিশুটি তাঁর সঙ্গে আছে। তবে তাঁর ১০ বছরের ছেলেটি বাড়িতে একা।
আজ একটি মামলায় তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় তিন বছরের ওই শিশু তাঁর কোলে ছিল।
তাঁর ১০ বছরের আরেক সন্তানকেও মায়ের জন্য আদালত ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মো. নাসিফ হাসান নামের ওই শিশু বলে, ‘মা কারাগারে যাচ্ছেন। ছোট বোনকেও কারাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবা কৃষি অফিসে চাকরি করেন। বাড়িতে এখন আমাকে একা থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নাহিদ ইসলাম মুন বলেন, কারাগারের পরিবেশ শিশুদের অনুকূলে নয়। ওই পরিবেশ তাদের মনে দাগ কেটে ফেলে। ফলে শিশুরা সেখানকার আচার-আচরণ শিখে নেয়। এতে মানসিক ও শারীরিক দুই ধরনেরই ক্ষতি হয় শিশুদের।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার নির্বাহী সদস্য আসলাম উদ দৌলা বলেন, ‘ছোট শিশু মায়ের সঙ্গে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে কোনোভাবেই যেন আইন লঙ্ঘন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘আজ এক নারীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আদালতের আদেশে ওই নারীর সঙ্গে তিন বছরের শিশুকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ছোট্ট শিশুকে মায়েদের কারাগারে পাঠানো হয়, এটাই নিয়ম।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে