বিনা কারণে চেইন টেনে ট্রেন থামানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় জরিমানার অঙ্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সরকারকে জরিমানা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবটি এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। বর্তমানে জরিমানা দিতে হয় ২০০ টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ইদানীং ট্রেনে চেইন টানার ঘটনা বেড়ে গেছে। সীমান্তের রেলপথে ট্রেন থামানোর ঘটনা বেশি ঘটে। ভারত থেকে চোরাই পথে আনা শাড়ি, মসলার মতো বস্তাভর্তি মালপত্র ট্রেনে ওঠাতে এবং সুবিধামতো স্থানে নামাতে ট্রেনে চেইন টানার ঘটনা ঘটে থাকে।
বিশেষ করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সান্তাহার, হিলি ও সৈয়দপুর স্টেশনে চেইন টানার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এতে ট্রেনের যাত্রাপথে বিলম্ব হয়। একশ্রেণির তরুণ শুধু দেখার জন্য চেইন টানেন যে এটা টানলে ট্রেন আসলেই থামে কি না বা টানলে কী হয়, তা দেখার জন্য। কেউ কেউ ট্রেন থামিয়ে হাসিমুখে জরিমানাও দেন। বলেন, এটাও জীবনের অভিজ্ঞতা!
পশ্চিম রেলের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবরে পশ্চিম রেলের পাকশী ও লালমনিরহাট বিভাগে বিনা প্রয়োজনে ট্রেনের চেইন টানার ঘটনা ঘটেছে ২৩টি। ফলে এসব ট্রেনের এক ঘণ্টা ৫৮ মিনিট যাত্রাবিলম্ব হয়েছে। নভেম্বর মাসে চেইন টানার এমন ঘটনা ঘটেছে ১০টি। এতে অপচয় সময় হয়েছে ৪৫ মিনিট।
ডিসেম্বরে পাকশীতে ২০টি ও লালমনিরহাটে দুটি ট্রেন যাত্রাপথে থেমেছে চেইন টানার কারণে। তাতে ট্রেনগুলোর গন্তব্যে পৌঁছাতে ২ ঘণ্টা ২৭ মিনিট সময় অপচয় হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে বলে আইন সংশোধন করে মন্ত্রণালয়ে ট্রেনের চেইন টানার জরিমানা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম রেলের এই প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন এগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এসব হয়ে গেলে অযথা ট্রেন থামানোর শাস্তির আইনে সংশোধন আসতে পারে। সংশোধন হতে পারে ১৯৮০ সালের এ আইনের।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘চেইন টেনে ট্রেন থামানোরও কিছু নিয়মকানুন আছে। কিন্তু যাঁরা চেন টানেন, তাঁদের বেশির ভাগই এসব নিয়মকানুন জানেন না। ধরা পড়লে হাসিমুখে ২০০ টাকা জরিমানা দিয়ে দেন। কিন্তু ক্ষতিটা হয় ২০০ টাকার চেয়ে অনেক বেশি। এই কারণে এখন জরিমানাটা বাড়ানো প্রয়োজন। সে কারণেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, জরিমানা বেড়ে যাবে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে