বগুড়ার শেরপুরে অবৈধভাবে প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকার ধান-চাল জব্দ করার ঘটনায় এসিআই ফুডের মালিকসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুর থানায় মামলাটি করেন উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মামুন-এ-কাইয়ুম।
মামলার আসামিরা হলেন এসিআই ফুড লিমিটেডের (রাইস ইউনিট) স্বত্বাধিকারী আরিফ দৌলা (৪৫)। তিনি ঢাকার গুলশান এলাকার বাসিন্দা। এসিআই ফুডের সিনিয়র অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩০)। অপর দুজন হলেন শিনু এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী শামীমা ইসলাম (৫০) এবং এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক এনামুল হক (৫২)। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রামজীবন ভৌমিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শেরপুর উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মামুন-এ-কাইয়ুম বলেন, তাঁরা অবৈধভাবে মজুত করে দেশে ধান-চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে বাজার অস্থিতিশীল ও মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা করছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (১) ২৫ ডি ধারায় মামলা করা হয়েছে। কাল শনিবার জব্দ ধান-চাল শেরপুর থানার পুলিশ তাদের হেফাজতে নেবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়িদহের জোয়ানপুর এলাকায় মেসার্স শিনু এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের পাঁচটি গুদামে প্রায় ১ হাজার ৯২৯ দশমিক ৮৭৫ টন চাল এবং ২ হাজার ৫৮১ দশমিক ৬৩ টন ধান অবৈধভাবে মজুত করা হয়েছে। সরকারি হিসাবে এর মূল্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৯০ টাকা।
কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট, ১৯৫৬ অনুযায়ী, সরকারি লাইসেন্স বাদে কোনো ব্যবসায়ী এক টনের বেশি খাদ্যশস্য বা সামগ্রী তাঁর অধিকারে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না। কিন্তু এসিআই ফুড লিমিটেড তাঁদের মজুত করা ধান-চালের পক্ষে কোনো নিবন্ধন বা সরকারি কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া মজুত করা চাল নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের বস্তায় প্যাকেটজাত করা হয়েছে।
শিনু এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী শামীমা ইসলামের স্বামী শফিকুল ইসলাম (শিরু) বলেন, ‘আমাদের কারখানাটি এসিআই ফুড লিমিটেডের কাছে ভাড়া দেওয়া রয়েছে। কারখানায় মজুত চালের ভাড়া বহনকারী কোম্পানির। অবৈধভাবে মজুতের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
মামলা প্রসঙ্গে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, মামলা হওয়ার পর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিনু এগ্রোতে অভিযান চালান জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন। এ সময় এসব ধান-চাল জব্দ করে শেরপুর উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়। গত বছরের ১ জুন শিনু এগ্রো ফুডস লিমিটেডে অভিযান চালানো হয়েছিল। তখন একই অপরাধে এসিআইকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে