ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের মঞ্চ ওঠার পরেও নেতা-কর্মীদের সারিতে অর্ধেকের মতো আসন ফাঁকা দেখা গেছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলীয় কোন্দলে নেতাদের ওপর থেকে কর্মীদের আস্থা হারানো আর সম্মেলনের প্রচারণার অভাবে নেতা-কর্মীরা উৎসাহ নিয়ে আসছেন না।
যদিও আজ সম্মেলন শুরুর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সম্মেলনে কমপক্ষে ৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে।’ ফাঁকা আসনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, ‘সম্মেলনটা সকালে হওয়ায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা তেমন আসতে পারেননি। শীতের সকাল না হলে মানুষের উপস্থিতি আরও দ্বিগুণ হতো।’
শনিবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মঞ্চে ওঠেন ওবায়দুল কাদের। সে সময় বিচ্ছিন্নভাবে নেতা-কর্মীদের সার্কিট হাউজ মাঠের দিকে মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায়।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মজিবুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘সম্মেলনের সময়টা সকালে হওয়ায় লোকজন আসতে সমস্যা হচ্ছে। লোকজনের আগেই আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের চলে আসছে। তবে লোকজন হবে আশানুরুপ।’
ফুলপুর উপজেলার রুপসী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মতিউর রহমান উজ্জল বলেন, ‘রাস্তাঘাটে অনেক লোক রয়েছে, তারা এখনো মাঠে আসতে পারেনি। তাই চেয়ার ফাঁকা রয়েছে। তবে লোকজন আস্তেধীরে আসছে।’
সাড়ে ১২টার দিকে বক্তব্য শুরু করেন ওবায়দুল কাদের। তার পরেও বেশির ভাগ আসন খালি দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ‘দলের মধ্যে ভেতরে ভেতরে অনেক কোন্দল রয়েছে। তাই কর্মীরা নেতাদের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। সাধারণ কর্মীদের বিগত সময়ে তেমন মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই দলের আজ এই অবস্থা।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, ‘সম্মেলনটা সকালে হওয়ায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা তেমন আসতে পারেননি। শীতের সকাল না হলে মানুষের উপস্থিতি আরও দ্বিগুণ হতো। আশা করছি সুন্দরভাবে সম্মেলনের আয়োজন করতে পেরেছি। দলের শীর্ষনেতারা যদি মনে করেন পুনরায় আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেবেন, তাহলে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করব। অন্যথায় দল যাকে মনোনয়ন করবে, তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করব।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ‘সম্মেলন উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সম্মেলনের আশপাশে সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দলীয় কোন গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য নগরী জুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সমাবেশস্থলে ২০০ পুলিশ সকাল থেকেই রয়েছে। এ ছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে