সাভারের আশুলিয়ায় নিজ দোকান থেকে গত ২২ নভেম্বর অপহরণের শিকার হন ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান। তাঁকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর গতকাল শনিবার তাঁকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় অপহরণকারী নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত নারী ব্যতীত বাকি ৫ আসামির দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন—যশোর জেলার মনিরামপুর থানার কেরতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল সাত্তার গাজীর ছেলে কেরামুন হোসেন সম্রাট (৩৪), টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার ধাউরা নয়াপাড়ার মৃত হাজী খবীর উদ্দীনের ছেলে আ. আউয়াল (৫০), একই থানার আন্দুরার মৃত আ. রশিদের ছেলে মো. বাবুল মিয়া (৫০), পেকুরা গ্রামের নজমত আলীর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম (৫১) ও তাঁর স্ত্রী খাদিজা (৩৮) ও একই জেলার বাসাইল থানার দাপনাজোর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. রাসেল মিয়া (৩৮)।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান মানিকগঞ্জের ঘিওর থানার পশ্চিম কলিয়া গ্রামের পান্নু মিয়ার ছেলে। তিনি আশুলিয়ার বাইপাইলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন ও আসবাবপত্রের ব্যবসা করেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেহেদি হাসান বলেন, ‘গত ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমি আমার আসবাবপত্রের দোকানে বসেছিলাম। এর মধ্যে পাঁচজন লোক ক্রেতা সেজে মালামাল দেখছিল। এরপর হঠাৎ করে তারা আইনের লোক বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে টেনে হিঁচড়ে হাইয়েচ মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। আমাকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করে ব্যাংক চেকে স্বাক্ষর করায়। আমার স্ত্রীকে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে। এছাড়া আমার কাছে টাকা পাবে এই মর্মে স্টাম্পেও স্বাক্ষর নেয়। গ্রেপ্তার নারী খাদিজা আমার পূর্ব পরিচিত ও দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তারা তুলে নিয়ে গেলে পরে ওই নারীকে দেখতে পাই।’
এ ঘটনায় গত ২৫ নভেম্বর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর মা রুবি বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় তাঁদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার দুপুর আদালতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এস আই আল মামুন কবির বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে আমরা অভিযান শুরু করি। প্রযুক্তির সহযোগিতা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধামরাই, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর ও মির্জাপুরে অভিযান চালাই। প্রথমে গাড়ি চালককে গ্রেপ্তার করি। তারপর তাঁর তথ্যমতে বাকিদের মির্জাপুর থানার পেছনে একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গ্রেপ্তার করি। তারা মূলত প্রায় তিন মাস ধরে তারা এই ব্যবসায়ীকে তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল। সে অনুযায়ী তাঁকে তারা হাইয়েচ মাইক্রোবাস নিয়ে এসে ফিল্মি কায়দায় পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। তাঁরা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচিত।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে