ইউক্রেনে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। এতে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো ও বিদ্যুদ্ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়ার হামলার পর দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশই আর মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। দেখা দিয়েছে পানির সংকটও। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে, ইউক্রেনে ‘জীবন সংকটাপন্ন’ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে কয়েক মিলিয়ন মানুষকে ঘর ছাড়তে হতে পারে।
বার্তা সংস্থা এএফপি ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংবাদমাধ্যম দুটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির বিদ্যুৎ কোম্পানি ইউক্রেনারজো জানিয়েছে, অবকাঠামো মেরামত করাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে তারা। তবে রাশিয়া আক্রমণের তীব্রতা বাড়ানোর ফলে এখন এ কাজে আরও বেশি সময় লাগছে।
এদিকে ইউক্রেনজুড়ে ধীরে ধীরে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রার মধ্যে তুষারপাত হচ্ছে। হাইপোথার্মিয়ায় দেশজুড়ে লোকজন মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিরাজ করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ও দেশটির ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা বলেছেন, ‘আসন্ন শীত ও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে বিদ্যুতের সংকট থাকার পরও আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব এবং নিজেদের টিকিয়ে রাখব।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দা ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখেছে বিদ্যুৎ নেই। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎস্কো বলেছেন, ‘নগরীতে বিদ্যুৎ, পানি ও উত্তাপের ব্যবস্থা না থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে।’ রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির ১৫টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানি না থাকায় পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত কঠিন’ বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তবে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতিও হচ্ছে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবগুলো অঞ্চলেই ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আরও বলছে, তারা দেশজুড়ে স্থাপিত ৪ হাজার কেন্দ্রে অস্থায়ী তাঁবুতে তাপ সরবরাহের ব্যবস্থা করে মানুষকে শীত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। লোকজন এসব তাঁবুতে ফোনে চার্জ দিতে পারবেন এবং সেখানে থাকবে চা-কফি পানের সুযোগ।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে