ঢাকার আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি মেহেদী হাসান ওরফে অমিকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে দুপুরের দিকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য মেহেদী হাসানকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পরিদর্শক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, মোহাম্মদপুরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি এই মেহেদী হাসান। এই মামলার জামিনপ্রাপ্ত আরেক আসামি হলেন ঈদি আমিন। সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানির সময় জামিনপ্রাপ্ত এ দুই আসামি অন্য আসামিদের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। বাইরে জঙ্গিদের যেসব সহযোগী ছিল, তাদের সঙ্গে এই আসামির যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেছে। গত ২০ নভেম্বর আদালত চত্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গি ছিনতাই হওয়ার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন মেহেদী হাসান। তাঁদের তথ্য জানার জন্য এবং এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য মেহেদী হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে বুধবার (২৩ নভেম্বর) মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির একটি টিম। মেহেদী হাসান মোহাম্মদপুর থানার একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের দায়ের হওয়া মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামি। মোহাম্মদপুর এলাকায় আটটি হ্যান্ড গ্রেনেড ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলার বিচার চলছে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিজেএম আদালত) অষ্টম তলায় অবস্থিত সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে।
ওই মামলায় ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গি আসামিসহ ১২ জনকে গত রোববার (২০ নভেম্বর) কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মেহেদী হাসানসহ দুজন জামিনপ্রাপ্ত আসামিও হাজির হন। ওই দিন ট্রাইব্যুনাল পলাতক ছয় আসামিসহ মোট ২০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠন শেষে ১২ আসামিকে আদালতের নিয়ে যায়। হাজতখানায় যাওয়ার পথে সিজেএম আদালত ভবনের প্রধান ফটকের বাইরে অপেক্ষায় থাকা সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করে দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাবকে ছিনিয়ে নেয়। দুজনই জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন ওরফে দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আবু সিদ্দিক ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলারও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
এদিকে ২০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় এই ছিনতাইয়ের ঘটার পর রাতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জুলহাস উদ্দিন আকন্দ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ছিনতাই হওয়া দুই আসামিসহ ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২১ জনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে