পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মোটা অংকের টাকা নিয়ে নববধূ চম্পা হত্যা মামলা থেকে কয়েকজন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা পটুয়াখালী পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল মতিন খানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে অভিযোগপত্র বাতিল করে পুনরায় তদন্তের দাবি জানান মামলার বাদী মো. চাঁন মিয়া সিকদার। গতকাল রোববার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করেন। এর আগে ৬ নভেম্বর এই অভিযোগপত্র বাতিল চেয়ে পুনঃ তদন্তের জন্য কলাপাড়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারাজির আবেদন করেন বাদী।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি তালতলী উপজেলার কলারং গ্রামের চাঁন মিয়া সিকদারের মেয়ে চম্পার সঙ্গে কলাপাড়া উপজেলার চাকামুইয়া ইউনিয়নের গামরীবুনিয়া গ্রামের কাদের হাওলাদারের ছেলে বাবুল হাওলাদারের বিয়ে হয়। ১২ জানুয়ারি বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে স্ত্রী চম্পাকে নিয়ে যান স্বামী বাবুল হাওলাদার। ২২ জানুয়ারি বাবুল হাওলাদারের বাড়ির কাছের মাঠে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় চম্পার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চম্পার বাবা চাঁন মিয়া সিকদার বাদী হয়ে ওই দিন কলাপাড়া থানায় বাবুল হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৭ মার্চ পুলিশ বাবুলকে গ্রেপ্তার করে। বাবুল থানায় ও আদালতে তাঁর সহযোগীদের নাম উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পটুয়াখালী পিবিআইয়ে ন্যস্ত করেন; কিন্তু পিবিআইর তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন খান প্রধান আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম উল্লেখ করা ব্যক্তি এবং এজাহারভুক্তদের অব্যাহতি দিয়ে শুধু বাবুলকে আসামি রেখে এ বছরের ২৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
চাঁন মিয়া সিকদার গতকাল সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন খান তাঁর কাছে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তিনি দেড় লাখ টাকা দেন। বাকি দেড় লাখ টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বাকি আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে প্রধান আসামি বাবুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন খান টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তদন্তানুসারে শুধু প্রধান আসামি বাবুলের বিরুদ্ধেই চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বাদী আদালতে অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি দিতেই পারেন।
পিবিআইর পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে নিয়ম অনুসারে আমার কাছে অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে