ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার চর ঈশ্বরদিয়া পূর্বপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (২০) গত ১৯ জুন তাঁর প্রেমিকা খুকি আক্তারকে (২০) নিয়ে ঘর ছাড়েন। খুকি আক্তারকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় সিরাজুলের মা লাইলী আক্তারকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে পিবিআইয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সায়েদুর রহমান।
অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, খুকি আক্তারকে ফিরে পেতে বাবা খোকন মিয়া ও মা নাসিমা আক্তার কনা সিরাজুল ইসলামের বাবা আব্দুর রশিদ ও মা লাইলী বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। অন্যথায় তাঁদের দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। তবে ১০ দিনেও মেয়ে খুকির সন্ধান না পেয়ে বাবা খোকন মিয়া ও মা নাসিমা আক্তার গত ২৮ জুন সকাল ৯টার দিকে সিরাজুলদের বাসায় যান। সিরাজুলের বাবা আব্দুর রশিদকে গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে আব্দুর রশিদের অনুপস্থিতিতে স্ত্রী লাইলী আক্তারের মুখ চেপে ধরে হাত–পা বিদ্যুতের কালো তার দিয়ে বেঁধে লাইলীর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
সায়েদুর রহমান জানান, এতে লাইলীর শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায়। লাইলী আক্তারকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক লাইলী আক্তারকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠান। পরে লাইলী আক্তারকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় লাইলী আক্তারের স্বামী আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাসের দল মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই মধ্যে থানা–পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সহযোগী এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর ও ৭ নম্বর আসামি আছমাকে গ্রেপ্তার করে। তবে মামলার মূল এজাহারভুক্ত এক নম্বর আসামি খোকন মিয়া ও ২ নম্বর আসামি নাসিমা আক্তার কনা আত্মগোপন করেন।
সায়েদুর রহমান বলেন, ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি টিমের সহযোগিতায় গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে খোকন মিয়া ও নাসিমা আক্তার কনাকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার খোকন মিয়া ও নাসিমা আক্তার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে