খুলনার খানজাহান আলী থানার মাত্তমডাঙ্গা শ্রীনাথ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুনজীর আহমেদ ওরফে মুনজীর হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তাঁরা হলেন আনোয়ার হোসেন ও আশরাফ আলী। এঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার জরিমানা; অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন। হত্যাকাণ্ডের ১৭ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত দুজন হলেন খুলনার খানজাহান আলী থানার গিলাতলা ১ নম্বর কলোনির আনোয়ার হোসেন ও মো. আশরাফ আলী। এদিকে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাঁদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। তাঁরা হলেন বাদশা শেখ, সোহেল, রুবেল, মেজবাহ উদ্দিন মুকুল, আহাদ ও একেন্দার ওরফে এসকেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০০৫ সালে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কতিপয় নেতা মুনজীরের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন পূর্ব বাংলার কিছু নেতা। তাঁকে হত্যার হুমকি দেন ওই নেতারা। এ সংবাদ জানতে পেরে মুনজীর স্থানীয় সাংবাদিক মনিরকে বিষয়টি অবহিত করেন। মনির বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে পূর্ব বাংলার নেতাদের নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিতে থাকেন। এরপর শুরু হয় তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে মুনজীর মাত্তমডাঙ্গা যুব সংঘের ভেতরে গিয়ে অন্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে প্রধান ফটক দিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসী যুব সংঘের ভেতরে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগে সন্ত্রাসীরা তাঁকে লক্ষ্য করে একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে। এর মধ্যে দুটি বোমা মুনজীরের হাতে ও পিঠে লাগে।
গুরুতর জখম অবস্থায় যুব সংঘের অন্য সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত ১টার দিকে মুনজীর মারা যান। পরদিন তাঁর বড় ভাই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ে করেন। খানজাহান আলী থানার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই মো. ফারুকুল ইসলাম। তিনি ২০০৬ সালের ৩০ জুন মুনজীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামিদের মধ্যে দাউদ, মঈন ও নেয়ামুল ইসলাম কুটি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এ মামলার আরেক আসামি আরিফুর রহমানকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে