পরিবেশ সুরক্ষায় ১০ দফা দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভা থেকে এসব দাবি তুলে ধরেন এইচআরপিবির সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
এইচআরপিবির সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন এবং সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের চেয়ারম্যান ড. মনজুর এ চৌধুরি। অতিথি বক্তা ছিলেন পরিবেশবিজ্ঞানী ড. আতিক রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা এবং পরিবেশ আন্দোলন বাংলাদেশের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মনজুর এ চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার নদীগুলোর বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। ঢাকার ৯৫ কিলোমিটারের মধ্যে নদীতে কেউ গোসল করতে পারে না এবং এই অংশের ভেতরে অনেক প্রজাতির প্রাণী নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ঢাকার ৫টি নদীকে দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আগামী বছরের ১৭ মার্চের মধ্যে আমরা আমাদের পরিকল্পনা শেষ করব। ফলে নদীগুলোতে মাছ, শামুকের বসবাস এবং মানুষের গোসল করার পরিবেশ তৈরি হবে।’
মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন আলোচনা এসেছে কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে সরকারের ঘোষণা এক রকম আর মাঠপর্যায়ে কাজ আরেক ধরনের। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য পরিবেশ নিয়ে যতগুলো আইন বাংলাদেশে আছে সারা বিশ্বে আর কোথাও নেই অথচ বিশ্বে বায়ুদূষণের এক নম্বর শহর ঢাকা।’
এইচআরপিবির দাবিগুলো-
১. পরিবেশবিধ্বংসী কাজে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার আইন প্রণয়ন করতে হবে।
২. জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী করে কমিশনের ক্ষমতায়ন করতে হবে এবং কমিশনকে সরাসরি কেবিনেটের আওতায় পরিচালনা করতে হবে।
৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করার আইন পাস করতে।
৪. পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকবল বৃদ্ধি, সকল জেলায় অফিস স্থাপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
৫. নদীর পাশে যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সিএস রেকর্ড অনুসারে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ করে ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. পরিবেশের ক্ষতি করার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা বন্ধ করে আইন অনুসারে সাজা নিশ্চিত করতে হবে এবং সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক সাময়িক বন্ধ ঘোষণার আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৭. পরিবেশ সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত সকল বিভাগে দক্ষ, সৎ, যোগ্য, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিদের নিয়োগ করতে হবে।
৮. পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট ৩ গুণ বৃদ্ধি করে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।
৯. পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদী, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সকল ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
১০. পরিবেশ রক্ষায় দক্ষ ও কার্যকর প্রশাসন গঠন এর লক্ষ্যে ‘পরিবেশ ইনস্টিটিউট’ গঠন এবং দেশ-বিদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের এই কাজে সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে