উল্টো মামলা দায়ের করা হয়েছে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সেই আহত স্কুলছাত্রী তাছলিমা আক্তারের নামে। সোমবার তার ওপর হামলাকারী মুন্না মিয়ার বাবা সারোয়ার জাহান (তাইজ্জুত) বাদী হয়ে আদালতে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে মুন্নাকে।
মামলায় তাছলিমা ছাড়াও তার বাবা শফিকুল ইসলাম (৪৫), চাচা তরিকুল ইসলাম (৪০), রবিকুল ইসলাম (৩৫), রফিকুল ইসলাম (৫০), ফুফাতো ভাই শরীফ মিয়া (২৬) ও শাহিন মিয়াকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া, অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ‘তাছলিমা উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। কারও বিধিনিষেধ না মেনে যেভাবে খুশি চলাফেরা করে। এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামিরা দেশীয় মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে বাদীকে আক্রমণ করতে যায়। পরে বাদী দৌড়ে বাড়িতে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দেয়। পরে ঘরের দরজা ভেঙে তাছলিমা বাদী সারোয়ার জাহানকে চুলের মুঠি ধরে ঘরে-বাইরে এনে পরনের কাপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি করে। সাক্ষীসহ ফেরাতে আসা অনেককে মারধর করে। একপর্যায়ে ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ মোট ২ লাখ ৭৫ টাকার মালামাল চুরি করে। শেষে অশ্লীল গালাগাল করে ও “যদি আইন আদালত করিস তাহলে খবর আছে” এমন হুমকি দিয়ে চয়ে যায়।’
তবে মামলার বাদী পুরুষ হলেও অভিযোগের শুরুতে বাদী নিজেকে ‘আমি আইন আদালত মান্যকারী সহজ, সরল ও অসহায় মহিলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও বাদী সারোয়ার জাহান একজন পুরুষ ও তিনি হালিমাকে জখম করার মামলায় আসামি মুন্না মিয়ার বাবা।
তাছলিমার বাবা শফিকুল ইসলাম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রতিপক্ষ আমার মেয়েকে চরিত্রহীনা বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। সে ছাত্রী নয়, পড়াশোনা করে না বলেও প্রচার করছে। আমাদের বিপদে ফেলার জন্য উল্টো তাঁরা মামলা করেছে। এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন মামলা। আমার মেয়েকে কুপিয়ে জখম করার পর তাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে রয়েছি। তাহলে এমন ঘটনা ঘটানো কীভাবে সম্ভব। আশা করি আদালতে ন্যায় বিচার পাব। মেয়েটি এসএসসি পরীক্ষার্থী, তার টেস্ট পরীক্ষা চলছে। প্রথম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পর তাকে কুপিয়ে জখম করেছে মুন্না। বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে পারছে না।’
স্থানীয় খান বাহাদুর কবির উদ্দিন খান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মৌলা বলেন, ‘তাছলিমা আমার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।’
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান বলেন, ‘এ মামলার কোনো কাগজপত্র এখনো থানায় পৌঁছেনি। আর ওই ছাত্রীকে জখমের মামলার আসামিরা পলাতক আছে। তাদের ধরতে চেষ্টা চলছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে