সাতক্ষীরার তালায় গোখাদ্য ছোলা, ভুট্টা, ভুসি ও খড়ের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। গত সপ্তাহে যে ভুসির দাম ছিল বস্তাপ্রতি ১ হাজার ৫৫০ টাকা; তা ৩৫০ টাকা বেড়ে এখন ১ হাজার ৯০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ৩ হাজার টাকার খৈলের বস্তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। এমনভাবে প্রায় সব গোখাদ্যের বস্তাপ্রতি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বাজার ব্যবসায়ী ও খামারিরা।
সরেজমিনে তালা উপজেলার হরিশচন্দ্রকাটি, ঘোনা, গঙ্গারামপুর, জেয়ালা ঘোষ পড়া, মহান্দি, ইসলামকাটি, জালালপুর এলাকার খামারি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গো খাদ্যের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় আসন্ন কোরবানির ঈদে গরুর হাটগুলোতে এর প্রভাব পড়তে পারে।
তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি হিসেব মতে, ৩ হাজার ৭৫৬টি গরুর খামারে বছরে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়। এ খামারগুলোর বাইরেও উপজেলায় ১ লাখ ৯৫০টি দেশি ষাঁড় গরু, ৫৭ হাজার ৬৯টি সংকর জাতীয় গরু রয়েছে, দেশি গাভি ২৫ হাজার ২০টি, সংকর জাতীয় গাভি ৪০ হাজার ৬৪০ টি, অন্যান্য জাতের ২ হাজার ৫শ ৯০টি গরু রয়েছে এবং ১১টি মহিষ রয়েছে।
তালার হরিশ্চন্দ্রকাঠির খামারি সত্যরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘আমার খামারে প্রায় চল্লিশটি গরু-গাভি রয়েছে। খৈল, ভুসি, কুড়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন কীভাবে কি করব কিছু বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে দাবি গোখাদ্যের দাম তাড়াতাড়ি কমিয়ে দেওয়া হোক। আমরা খুব বিপদে আছি।’
মহান্দী গ্রামের খামারি প্রনাব ঘোষ জানান, তাঁর ছোট বড় ২২টি গাভি আছে। প্রতিদিন সাত হাজার টাকার খাবার লাগে। বর্তমানে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। এই ভাবে দাম বাড়তে থাকলে গরু বেঁচে খাবার কিনতে হবে।
তালা বাজারের গরু খামারি অসিম রায় বলেন, ‘গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের মতো অল্প পুঁজির খামারিরা এখন কষ্টে আছেন। আমরা এখন কি করব কোনো দিশা পাচ্ছি না। গরু খাওয়াতে না পারলে কোরবানিতে ভালো দামে বিক্রি করতে পারব না। সরকার আমাদের বিষয়টি না দেখলে একেবারে মাঠে মারা যাবো।’
তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাছুম বিল্লাহ জানান, হঠাৎ গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তাঁরা বিকল্প হিসাবে ঘাসের ব্যবহার বাড়িয়েছেন। আমরা আশা করছি দ্রুত বাজারে একটা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। তখন খামারিদের হতশাও কেটে যাবে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে