প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পটভূমিতে আঞ্চলিক সংকট মোকাবিলায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে পাঁচটি প্রস্তাব রেখেছেন।
আজ জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসক্যাপ) ৭৮তম অধিবেশনে পাঁচটি প্রস্তাব রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যে প্রস্তাবগুলো রেখেছি সে গুলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে এসক্যাপ বিবেচনা করতে পারে এবং অবিলম্বে পরিস্থিতি মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরামর্শের ব্যাখ্যায় আঞ্চলিক সংকট ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা উন্নত করতে আর্থিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আরও বাস্তবসম্মত উপায়ে স্নাতক দেশগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থার অনুরোধ জানান।
প্রস্তাবগুলোতে, তিনি জ্ঞান এবং উদ্ভাবনের জন্য সহযোগিতার সুবিধার্থে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোতে পর্যাপ্ত তহবিল এবং প্রযুক্তি বরাদ্দের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে একত্রিত হয়ে সহায়তা করারও পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী আরেকটি প্রস্তাবে ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তথ্যপ্রযুক্তি বৃদ্ধির জন্য আইসিটি’র প্রসারের কথা বলেন, যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় পরিষেবাগুলোকে সক্ষম করবে।’
বৈশ্বিক অর্থনীতি সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন রুশ-ইউক্রেনীয় সংঘাত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো যুদ্ধে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধিবেশনের থিম, ‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন অগ্রসর করার জন্য একটি সাধারণ এজেন্ডা, একটি টেকসই বিশ্বের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা, অংশীদারত্ব এবং সংহতি জোরদার করতে সঠিকভাবে পদক্ষেপ বেছে নেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশকে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে স্নাতক হওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এটি আমাদের পরিকল্পিত উন্নয়ন যাত্রার বৈশ্বিক স্বীকৃতি যা, আমরা গত তেরো বছর ধরে অনুসরণ করছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘তাঁর সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণই আমাদের উন্নয়ন সাধনার কেন্দ্রবিন্দু, এসডিজিতেও তাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার এসডিজিতে প্রদত্ত কাঠামোর পরিকল্পিত নথিতে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশগত সুরক্ষা এবং আইসিটির একীভূতকরণের চ্যালেঞ্জ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা এসডিজি-১ এবং এসডিজি-২ এর মূল প্রতিপাদ্য।’
কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বাংলাদেশে মহামারি মোকাবিলা করার সময় তাঁর সরকার জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে