আমরা আমাদের চারদিকে যেসব সৃষ্টি দেখতে পাই ও ব্যবহার করি, তা-ই প্রকৃতি। আর প্রকৃতির মাঝে ভারসাম্যকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বলা হয়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় উদ্ভিদের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা মানুষের পাঁচটি মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার উপকরণ, চিকিৎসাসহ সব কয়টিই আমরা উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি।
পশুপাখিদের আহার ও বাসস্থানের জন্য গাছগাছালির ভূমিকা অনস্বীকার্য। অনেক পথিক পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেয় এবং পরিতৃপ্ত হয়ে পুনরায় পথ চলতে শুরু করে। এ ছাড়া উদ্ভিদরাজি প্রাণিকুলের জীবন রক্ষাকারী উপাদান অক্সিজেন প্রতিনিয়ত সরবরাহ করে। সুতরাং উদ্ভিদের এ দান ছাড়া মানুষ ও পশুপাখির জন্য পৃথিবীতে জীবনযাপন করাই অসম্ভব।
বৃক্ষনিধন করলে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে এ কথা আমরা একেবারেই ভুলে গেছি। ফলে পরিবেশে নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটছে। সৃষ্টি হচ্ছে খরা, ভূমিক্ষয়, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ রকমারি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। উদ্ভিদের এ গুরুত্বের প্রতি লক্ষ্য করে মহানবী (সা.) ঘোষণা করেন, ‘যখনই কোনো মুসলমান গাছ লাগায় বা শস্য বপন করে এবং তা থেকে মানুষ, প্রাণী বা পশুপাখি আহার গ্রহণ করে, তখন এটা তার জন্য সদকা বা দান হিসেবে পরিগণিত হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
এমনকি মহানবী (সা.) যুদ্ধের প্রাক্কালে যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলতেন, ‘তোমরা নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের নিকটবর্তী হবে না এবং গাছপালা কর্তন করবে না।’ আর মদিনা শহরের গাছপালার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মদিনা শরিফের গাছপালা কর্তন করা যাবে না। যে ব্যক্তি এখানে বিপর্যয় ঘটাবে, তার ওপর আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতামণ্ডলী এবং মানব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে অভিশাপ বর্ষিত হবে।’ (বুখারি)
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় উদ্ভিদরাজি কর্তন নয়, বরং সুযোগ পেলেই স্থানভেদে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ রোপণ করতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে