দারিদ্র্যকে জয় করে দেশের সেরাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছে পীরগঞ্জের কিশোর ফুটবলার লিয়ন প্রধান। এখন সে প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে ব্রাজিল। বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিদপ্তরের সহযোগিতায় দুই মাসের এই প্রশিক্ষণে সে অংশ নেবে।
পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমির কৃতি খেলোয়াড় লিয়ন পৌরসভার ধনশালা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। সে পীরগঞ্জ সরকারি শাহ আব্দুর রউফ কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ছে।
ফুটবলের অনূর্ধ্ব-১৭ প্রতিযোগিতা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ড কাপ টুর্নামেন্ট’ থেকে প্রতিভাবান ৪০ খেলোয়াড় বাছাই করে বিকেএসপিতে দুই মাসব্যাপী উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখান থেকে ব্রাজিলে অধিকতর উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য ১১ জনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে সামনের মাঠের খেলোয়াড় হিসেবে লিয়ন জায়গা করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে আরও চার খেলোয়াড়কে অতিরিক্ত হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। ক্রীড়া পরিদপ্তর থেকে ৪ এপ্রিল নামের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।
লিয়ন বলে, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি ফুটবল খেলে আসছি। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে আমার কোনো ইচ্ছাই পূরণ হয়নি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, খেলার জন্যই বিদেশে যাচ্ছি। জীবনে প্রতিষ্ঠার জন্য সবার দোয়া চাই।’
ছেলের এই সাফল্যে আনন্দিত বাবা রফিকুল বলেন, ‘বসতভিটা ছাড়া আমার আর কোনো জমি নেই। সংসারের খরচ চালাতে অন্যের জমিতে কাজ করি। দুই ছেলেমেয়েকে খাবারই দিতে পারি না। স্কুলে যাওয়ার জন্য লিয়ন একটা বাইসাইকেল চেয়েছিল। অভাবের কারণে সাইকেলটা দিতে পারি নাই। অভাবের মধ্যে বড় হওয়া আমার ছেলেটা ফুটবল খেলার জন্য বিদেশে যাচ্ছে।’
পীরগঞ্জ ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কোচ মাহমুদুল হাসান সোহেল জানান, তাঁরা ফুটবল খেলাকে ধরে রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁদের খেলোয়াড় লিয়ন বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছে। সে ফুটবলে প্রশিক্ষণ নিতে ব্রাজিলে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান মাহমুদুল।
লিয়ন ফুটবল খেলায় যেন পীরগঞ্জ তথা উত্তরবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে সে জন্য সবার কাছে দোয়া চান একাডেমির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। তিনি জানান, তাঁদের একাডেমির আরও তিন খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে যেতে পারে। এ জন্য বাছাইও হয়েছে।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে