Ajker Patrika

মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতই প্রধান লক্ষ্য

মতিউর তানিফ
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ২২
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতই প্রধান লক্ষ্য

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী
গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে চাকরিরত সব শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। শুধু তা-ই নয়, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সদা সচেষ্ট গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়। এ ক্ষেত্রে ফার্স্টক্লাসধারী প্রতিযোগিতামূলক লিখিত পরীক্ষা এবং গবেষণায় পারদর্শী ব্যক্তিদের প্রেজেন্টেশন ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, নিয়োগদানের পর তাঁদের (শিক্ষক) শিক্ষাদান দক্ষতা বৃদ্ধিতে সেমিস্টারজুড়ে (চার মাস) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যে ধারা গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মানকে বহু গুণে বৃদ্ধি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা প্রবীণ শিক্ষকেরাও তুলনামূলক অধিক যোগ্য ও অভিজ্ঞ। প্রশিক্ষণ জগতের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বর্তমানে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক এই উপ-উপাচার্য দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের এসআইটি গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউটে ‘ভিজিটিং প্রফেসর’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আছেন উপদেষ্টা হিসেবে। ডিসটিংগুইজ্ড প্রফেসর হিসেবে অধ্যাপনা করছেন টেক্সটাইলের ওপর দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘বুটেক্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য (সাবেক) অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর এবং বুয়েটের ইইই বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. কামরুল আহসান। 

আইইবি অ্যাক্রেডিটেশন
অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, মানসম্মত ল্যাব, লাইব্রেরি এবং শ্রেণিশিক্ষা ও মানসম্মত গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) কর্তৃক অ্যাক্রেডিটেশন পেয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির ‘কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই)’ ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ। বাংলাদেশে যতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আইইবি স্বীকৃতির আওতাভুক্ত। 

স্কলারশিপে বিদেশে পড়ার সুবিধা
গ্রিন ইউনিভার্সিটির কার্যক্রম বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ছাত্র-শিক্ষক বিনিময় এবং যৌথ গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব হাডারস্ফিল্ড, অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটি, চীনের বেইজিং ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচারাল ইউনিভার্সিটি (বিএলসিইউ), উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়ার বাইনারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইতালি-ভারতের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী দেশগুলোতে স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

অনলাইন শিক্ষায় এগিয়ে
করোনাকাল শুরু হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ইউজিসির নির্দেশনা মেনে অনলাইনপদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এর আগে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বিডিরেনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন ক্লাস পরিচালনায় পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ক্লাস ছাড়াও সব ধরনের শিক্ষা সেবা নিশ্চিত করছে অনলাইনের মাধ্যমে। 

গবেষণায় অনন্য অবদান
গবেষণায় অনন্য অবদান রাখছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। কোভিড-১৯ সময়ে দেশি-বিদেশি জার্নালে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি ‘বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘রিসার্চ এক্সিবিশন অ্যাওয়ার্ড’ চালু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম উদ্যোগ। এ ছাড়া গবেষণা কার্যক্রমকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে চালু করা হয়েছে ‘জার্নাল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার সিস্টেম’। 

 ‘ক্যারিয়ার’ গড়তে সহায়তা
গ্রিনই অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়—যারা প্রত্যক্ষভাবে তাদের গ্র্যাজুয়েটদের কর্মক্ষেত্র নির্ধারণে সহায়তা করছে। প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চশিক্ষা শেষে প্রতিবছর যতসংখ্যক শিক্ষার্থী চাকরির প্রতিযোগিতায় নামছেন, সে তুলনায় দেশে শূন্য পদের সংখ্যা অনেক কম। মূলত এ চিন্তা থেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ইউএস-বাংলা গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সিজিপিএ ও ইংরেজিতে দক্ষ হলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসহ গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে চাকরি পাচ্ছেন গ্রিনের গ্র্যাজুয়েটরা। এর বাইরেও গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির সুবিধা দিতে গড়ে তোলা হয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিসিডি)। যে সেন্টারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁদের সফট স্কিল বৃদ্ধি করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং দেশি-বিদেশি কর্মক্ষেত্রে আবেদনের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত চাকরি বেছে নিতে পারছেন। 

নান্দনিক স্থায়ী ক্যাম্পাস ও আন্তর্জাতিক মানের মাঠ
ঢাকার সন্নিকটে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নান্দনিক পরিবেশে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। যার শিক্ষা কার্যক্রম দুই বছর আগেই শুরু হয়েছে। চলছে ভর্তি কার্যক্রম, নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা গ্রহণসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ড। ক্যাম্পাসটিতে যেতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। 

আন্তর্জাতিক মানের খেলার মাঠ
গ্রিন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে রয়েছে ইনডোর ও আউটডোরে খেলাধুলার সব আয়োজন। এ জন্য স্থায়ী ক্যাম্পাসে গড়ে তোলা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের বিশাল খেলার মাঠ। আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাঠটির ব্যাসার্ধ করা হয়েছে। পিচ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে।

আছে ১৭টি ক্লাব শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম বেগবান রাখতে গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ১৭টি ক্লাব। এগুলো হলো ডিবেটিং ক্লাব, গ্রিন বিজনেস ক্লাব, মার্কেটিং ক্লাব, ইংরেজি ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব, ল ক্লাব, সোশ্যাল বন্ডিং ক্লাব, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ক্লাব, টেক্সটাইল ক্লাব, কম্পিউটার ক্লাব, জেএমসি ক্লাব, গ্রিন ওয়ারিয়র ক্লাব, রিডিং সোসাইটি, ফটোগ্রাফি ক্লাব, কালচারাল ক্লাব, থিয়েটার ক্লাব, ব্লাড ক্লাব। এসব ক্লাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী বহুমুখী শিক্ষালাভ ও গুণাবলি অর্জনের সুযোগ পান।

অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরঅধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির: উপাচার্য, গ্রিন ইউনিভার্সিটি
গ্রিন ইউনিভার্সিটি তিন মূলমন্ত্রে বিশ্বাসী। আমরা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক্যালি কমপিট্যান্ট দেখতে চাই; অর্থাৎ একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়েই পড়ুক না কেন, তাঁকে ওই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁদের নৈতিক, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক দায়িত্ববোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট। শিক্ষার এই মান উন্নয়নে আমরা মোট পাঁচটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এগুলো হলো মানসম্মত শিক্ষা, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী, উন্নত কোর্স কারিকুলাম, দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং উন্নত ভৌত অবকাঠামো।

তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য নৈতিক মূল্যবোধ ও কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বয়ে দেশে প্রজন্মপরম্পরায় শিক্ষিত, চরিত্রবান ও প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার মতো দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা; যাঁরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি নৈতিক উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।

অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকঅধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক: উপদেষ্টা, গ্রিন ইউনিভার্সিটি
মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার ক্রমাগত উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিগগিরই গ্রিন ইউনিভার্সিটির কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। এ ক্ষেত্রে আউটকাম বেসড এডুকেশন (ওবিই) পদ্ধতি গ্রিন ইউনিভার্সিটি কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, করোনাকালে গ্রিন

ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় সফলতা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজড করা। আমরা অনলাইন ভর্তি, অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা, ভাইভা, কোর্স রেজিস্ট্রেশন, ফলাফল মূল্যায়ন ও প্রকাশ, সার্টিফিকেট, মার্কশিট প্রদানসহ সব ধরনের সেবা অনলাইনের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা বড় অর্জন। অগ্রগতির এই ধারা বজায় রেখে অচিরেই গ্রিন ইউনিভার্সিটিকে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতনে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ফান্ড
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রিন ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড’ গঠন। যে ফান্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা মাসের শুরুতে নির্দিষ্ট পরিমাণ (সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু) টাকা প্রতি মাসে দিয়ে থাকেন। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতি সেমিস্টারে এই ফান্ড থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন।

স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম
মানসম্মত শিক্ষার্থী নিশ্চিত করতে ‘স্টুডেন্ট মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম’ বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রছাত্রীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে নবাগত ছাত্রছাত্রীদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য সিনিয়র শিক্ষার্থীরা উপদেশ-পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যে ধারা প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়। এরপর ২য় সেমিস্টার থেকে শুরু হয় একাডেমিক অ্যাডভাইজিং। এর মাধ্যমে বিভাগীয় শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ যোগাযোগ করে থাকেন; যা পরবর্তী চার বছর পর্যন্ত চলতে থাকে।

জাপানে ভর্তিচ্ছুদের জন্য ‘নাট টেস্ট’
জাপানি ভাষায় দক্ষতার আন্তর্জাতিক পরীক্ষা ‘নাট টেস্ট’ বাংলাদেশে একমাত্র গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হয়। আগে এই পরীক্ষা দিতে শিক্ষার্থীদের নেপাল যেতে হতো। জাপানে পড়াশোনায় ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের এবং ভিসা আবেদনে আগ্রহীদের এ সুযোগ করে দিচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

দুই আন্তর্জাতিক সম্মেলন
চতুর্থ শিল্প চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই বছর ধরে ‘সাসটেইনেবল টেকনোলোজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ সম্মেলন করে আসছে সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। এ বছর বিজনেস, ল ও সোশ্যাল সায়েন্সের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘ইনোভেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। দেশি-বিদেশি প্রথিতযশা ও খ্যাতিমান বিজ্ঞানী এবং ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মতবিনিময় ও প্রফেশনাল রিলেশনশিপ তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখছে এই সম্মেলনগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত