ইসলাম মানবতার ধর্ম। শান্তি, সৌহার্দ্য, সাম্য-মৈত্রী, সহনশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা, উদার নৈতিকতা, মূল্যবোধগত উৎকর্ষ, অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবিকতা হলো ইসলামের পরম আদর্শ। ইসলাম প্রবর্তনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিচার-বিশ্লেষণ করলেই পূতপবিত্র এই জীবন-বিধানের নান্দনিক ও সৌন্দর্যময় চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ পরিলক্ষিত হবে। সর্ব প্রকার হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা আর পাশবিকতার সমাধি রচনা করে মানবতার ধর্ম ইসলামের কল্যাণময় সৌধমালার গোড়াপত্তন ঘটে।
সমগ্র বিশ্বে অমানবিকতার সব ধরনের রেকর্ড যখন অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল, তখনই ইসলাম তার সর্বমানবিক রূপটি নিয়ে বিশ্বমানবতার জন্য আবির্ভূত হয়। অজ্ঞতার অন্ধকার ভেদ করে ইসলাম তার মানবিকতার স্পর্শে সব মানুষকে আপন করে নেয়। ব্যক্তি-আক্রোশ, পারিবারিক বিরোধ, সামাজিক বৈষম্য আর জাতি-ধর্মের সব ভেদাভেদ দূর করে সাম্য-মৈত্রী আর বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের আদলে এক আদর্শস্থানীয় শান্তিময় সমাজকাঠামো গড়ে তোলে। অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে ইসলামের দ্রুত প্রসারের মূলে যে কয়টি অনুষঙ্গ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, তার অন্যতম হলো সমাজে মানবিক মূল্যবোধের উপস্থিতি ও তার সফল প্রয়োগ। ইসলামের মানবতাবাদী আদর্শ সমকালীন ব্যক্তি ও সমাজ-মানসের ইতিবাচক পরিবর্তনে অনবদ্য অবদান রেখেছে।
ইসলামি জীবনদর্শনে বিশ্বমানবতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। মানবসভ্যতায় সম্প্রীতির পৃথিবী আর সর্বজনীনতার প্রকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে ইসলাম। এরশাদ হচ্ছে, ‘আজ আমি তোমাদের জীবনব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের ওপর প্রদত্ত আমার অনুগ্রহকেও সম্পূর্ণ করে দিলাম আর তোমাদের জন্য জীবনপদ্ধতি হিসেবে ইসলামকেই মনোনীত করে দিলাম।’
মানবজাতির জন্য মহান আল্লাহর মনোনীত এই ইসলামের মূল মর্মবাণীই হচ্ছে কল্যাণকামিতা ও মানবিকতা। হাদিসে এসেছে, ‘ধর্ম কল্যাণকামিতার নাম’ অর্থাৎ, ইসলাম এমন এক ধর্ম, যা সর্বদাই কল্যাণের কথা বলে, মানবিকতার জয়গান গায় এবং ভালোবাসার পূর্ণতা দান করে। ইসলাম, কোরআনে কারিম আর মহানবী (সা.)-এর প্রতিটি বাণী ও বক্তব্যে বিশ্বমানবতার প্রকৃত স্বরূপ পরিস্ফুট হয়ে ওঠে।
লেখক: চেয়ারম্যান, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে