‘মননশীলতার পিতা’ হিসেবে পরিচিত প্রভাবশালী ভিয়েতনামের বৌদ্ধ সন্ন্যাসী থিচ নাট হ্যন মারা গেছেন। আজ শনিবার ভিয়েতনামের হিউয়ের তু হিউ মন্দিরে ৯৫ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু হয়ে পাঁচ দিনে শেষ হবে।
থিচ নাট হ্যনের জেন (ধ্যান) শিক্ষাদানকারী সংস্থা প্লাম ভিলেজের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শনিবার ভিয়েতনামের হিউয়ের তু হিউ মন্দিরে সন্ন্যাসী ‘শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন’। এক টুইটে হ্যনকে সবার হৃদয়ে ধারণের আহ্বানও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
হ্যন একজন বিশিষ্ট লেখক ও শান্তিকর্মী। তাঁকে প্রায়ই ‘মননশীলতার পিতা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় তিনি মার্টিন লুথার কিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন, নাগরিক অধিকার আন্দোলনকারী এই নেতাকে সংঘাতের বিরুদ্ধে কথা বলতে রাজি করান। যুদ্ধের বিরোধিতা করায় ১৯৬০ সালে তিনি ভিয়েতনাম থেকে নির্বাসিত হন। তবে লুথার কিং তাঁকে নাম দেন ‘শান্তি ও অহিংসার প্রেরিত’।
নির্বাসিত হওয়ার পর এই সন্ন্যাসী কয়েক দশক ফ্রান্সে কাটিয়েছিলেন এবং বিশ্বজুড়ে মঠ ও ধ্যান কেন্দ্র স্থাপন করেছেন, যা প্লাম ভিলেজ ট্র্যাডিশন নামে পরিচিত। তিনি ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত স্পিকিং ট্যুরে ভ্রমণ করেছেন, মননশীলতার অনুশীলন সম্পর্কে কথা বলেছেন। জীবদ্দশায় তিনি ১০০টিরও বেশি বই লিখেছেন, যা ৪০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তার শেষ বইটি প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। হ্যন নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন।
তবে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট সরকার দ্বারা ২০০৯ সালে তাঁর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। বাধ্য হয়ে লাম ডংয়ের জেন কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়। পরে ২০১৮ সালে তিনি ভিয়েতনামে ফিরে আসেন এবং কর্তৃপক্ষ তাঁকে জীবনের শেষ দিনগুলো তু হিউ মন্দিরে কাটানোর অনুমতি দেয়। এই মন্দিরেই তাঁর মৃত্যু হলো।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে