গমের দাম বেশি হওয়ায় মানুষ এখন আটা রেখে চালের দিকে ঝুঁকছে বলে মনে করছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। এ জন্য ধানের উৎপাদন ভালো হলেও এই খাদ্যশস্যের দাম কিছুটা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সপ্তম ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে জানাতে আজ মঙ্গলবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেন কৃষিমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। সেখানেই তিনি এই মন্তব্য করেন।
ধানের উৎপাদন ভালো হওয়ার পরও চালের দাম একটু একটু করে বাড়ছে। এমনটা হওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে কি না, এই প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখন গমের দাম বেশি। সব সময় গমের দাম কম থাকে। যখন আটার দাম কম থাকে তখন মানুষ আটা খায়। এখন উল্টো হয়েছে। ফলে মানুষ আবার চালের দিকে ঝুঁকেছে। এটাও চালের দাম বাড়ার একটা কারণ।
বিদেশ থেকে যে গম ২৫০ থেকে ৩০০ ডলারে কেনা হতো, দাম বেড়ে টনপ্রতি ৪৫০ ডলার হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সারের দামও বেশি। ২৫০ টাকার সার এখন ১ হাজার টাকা। এসব কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে একটা অস্থিতিশীলতা আছে কৃষি উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ নিয়ে। আমি মনে করি, এটা কেটে যাবে। কিছু জিনিসের দাম বাড়লেও এটা বেশি দিন থাকবে না।’
উৎপাদন বাড়লেও চাল ও তেলের দাম কমছে না কেন, এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চাল আমাদের প্রধান খাদ্য। চালের সঙ্গে এখন আমরা গম খাচ্ছি, গমের উৎপাদনও বাড়ছে। ভুট্টা উৎপাদন হচ্ছে, ভুট্টা মূলত পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি পোলট্রি, লাইভস্টক ও ফিশারিজ ক্ষেত্রে মুরগি, গরু ও মাছকে খাওয়ানো হয়। বিভিন্ন ফসল করার জন্য আমাদের জমিও বরাদ্দ দিতে হচ্ছে। জমিও চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন ফসলের মধ্যে জমি ব্যবহারের প্রতিযোগিতা হচ্ছে।’
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ থেকে ২৪ লাখ নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে তাদের খাদ্যের জোগান দিতে হচ্ছে। রোহিঙ্গারা রয়েছে ১০ লাখ, এদের খাদ্যও আমরা স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করে থাকি।’
সার্বিক বিচারে দেশে ওইভাবে খাদ্যের সংকট নেই বলে মনে করেন আব্দুর রাজ্জাক। তাঁর মতে, দেশে কিছুটা মূল্যস্ফীতি রয়েছে, যার ফলে খাদ্যের দাম বেশি। বাজারে গিয়ে কেউ চাল কিনতে পারেননি, তা হয়নি।
নতুন প্রযুক্তি ও ধানের জাত বাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করা সম্ভব হবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা সরিষার অনেক সুন্দর জাত আবিষ্কার করেছেন। সেগুলো আমরা মাঠপর্যায়ে নিতে চাচ্ছি। একটা অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা উৎপাদন হবে।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে