এক মুসলিম নারীর বাড়ির বাগানে অবৈধভাবে গির্জা নির্মাণের অভিযোগে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে ইউরোপীয় একটি আদালত। আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে নির্দেশটি বাস্তবায়নের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
তুরস্ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইয়ানি শাফাকের খবরে বলা হয়, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় ১৯৯২-১৯৯৫ সালে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ফাতা অলিভিচকে তার বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার পর ওই গির্জা নির্মাণ করা হয়।
ফাতা অলিভিচ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার যুদ্ধকালীন সময় পর্যন্ত দেশটির শ্রাব্রিনিসা উপশহরে স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। ১৯৯৫ সালে এ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া গণহত্যা তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন।
এ যুদ্ধে স্বামী সাজির অলিভিচসহ অন্তত ২২ জন নিকটাত্মীয়কে হারান তিনি। আর এসময় তাকে বাপদাদাদের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। অনেক ঘটনার পর ১৯৯৯ সালে যুদ্ধ শেষে যখন তিনি আবার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন, তখন বাড়ি থেকে মাত্র ৩০ মিটার নবনির্মিত একটি গির্জা দেখতে পান-যা তারই জায়গায় তাকে না জানিয়ে এক সার্বিয়ান অবৈধভাবে নির্মাণ করেছে। এরপর ফাতা অলিভিচ নিজ জমিন থেকে গির্জা অপসারণের জন্য আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন এবং আদালতের দ্বারস্থ হন। এসময় গির্জা-কতৃপক্ষ তাকে জমির মূল্য পরিশোধ করার কথা জানালেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। অবশেষে আদালতের মাধ্যমে তিনি নিজ জায়গাটুকু আবার ফিরে পেলেন।
১৯৯৯ ও ২০০১ সালের চুক্তি অনুযায়ী, বসনিয়ার সার্ব কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যাওয়া নাগরিকদের দখলকৃত জমি ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
আদালত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ফাতার বাড়ির সামনে থেকে গির্জাটি সরিয়ে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ফাতা অলিভিচকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ হাজার ইউরো এবং ফাতার আত্মীয়কে দুই হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।